প্রথম পর্ব
আজ আমরা কথা বলব এম এস ওয়ার্ড (Microsoft Word) হলো মাইক্রোসফট কর্পোরেশন কর্তৃক তৈরি করা একটি শক্তিশালী ও বহুল ব্যবহৃত ওয়ার্ড প্রসেসিং সফটওয়্যার নিয়ে। এটি অফিস কাজ, রিপোর্ট লেখা, চিঠিপত্র তৈরি, প্রবন্ধ লেখাসহ বিভিন্ন ধরণের ডকুমেন্ট তৈরি ও সম্পাদনা করার জন্য অত্যন্ত জনপ্রিয়। নিচে বিস্তারিত তথ্য প্রদান করা হলো:-
মূল বৈশিষ্ট্যগুলো:
- ডকুমেন্ট তৈরি: বিভিন্ন ধরনের ফরম্যাটে ডকুমেন্ট তৈরি করা যায়, যেমন পত্র, প্রবন্ধ, রিপোর্ট ইত্যাদি।
- টেক্সট সম্পাদনা ও ফরম্যাটিং: লেখার আকার, ফন্ট, রঙ, স্টাইল পরিবর্তন করা, প্যারা ফরম্যাটিং করা, এবং আরও অনেক কিছুর সুবিধা রয়েছে।
- ছবি ও গ্রাফিক্স যোগ করা: ডকুমেন্টে ছবি, চার্ট, টেবিল, এবং বিভিন্ন গ্রাফিক্স যোগ করে ডকুমেন্টকে আরও আকর্ষণীয় করা যায়।
- টেম্পলেট ব্যবহার: পূর্বনির্ধারিত টেম্পলেট ব্যবহার করে দ্রুত ডকুমেন্ট তৈরি করা সম্ভব।
- স্পেল চেক ও গ্রামার চেক: অটোমেটিক বানান ও ব্যাকরণ পরীক্ষা করার সুবিধা রয়েছে।
- ট্র্যাক চেঞ্জ: ডকুমেন্টে পরিবর্তনগুলো ট্র্যাক করা যায়, যা দলগত কাজের জন্য খুবই উপযোগী।
১. ইন্টারফেস পরিচিতি
- Ribbon (রিবন): এম এস ওয়ার্ড-এর উপরের অংশে একটি টুলবার থাকে, যাকে Ribbon বলা হয়। এটি বিভিন্ন ট্যাব (Tabs) নিয়ে গঠিত, যেমন: Home, Insert, Design, Layout, References, Mailings, Review, এবং View। প্রতিটি ট্যাবের নিচে আবার বিভিন্ন কমান্ড গ্রুপ থাকে।
- Quick Access Toolbar: উপরের বাম দিকে একটি ছোট টুলবার থাকে, যেখানে প্রয়োজনীয় কমান্ড যেমন Save, Undo, Redo ইত্যাদি যুক্ত করা যায়।
- Document Area: যেখানে আপনি লেখা টাইপ করেন। এটি একটি সাদা পৃষ্ঠার মতো দেখতে।
২. মৌলিক কার্যপ্রণালী
- ডকুমেন্ট তৈরি ও সংরক্ষণ (Save) করা:
- একটি নতুন ডকুমেন্ট তৈরির জন্য File ট্যাবে গিয়ে New-এ ক্লিক করতে হয় এবং পছন্দের টেম্পলেট বা ব্ল্যাঙ্ক ডকুমেন্ট নির্বাচন করতে হয়।
- ডকুমেন্ট তৈরি শেষে File > Save বা Save As-এ ক্লিক করে এটি হার্ড ড্রাইভে সংরক্ষণ করতে হয়।
- ডকুমেন্ট খোলা (Open):
- পূর্বে তৈরি ডকুমেন্ট খোলার জন্য File > Open-এ ক্লিক করে ফাইল নির্বাচন করতে হয়।
- ডকুমেন্ট প্রিন্ট করা:
- ডকুমেন্ট প্রিন্ট করার জন্য File > Print-এ ক্লিক করলে প্রিন্ট অপশন আসে, যেখানে পেজ সাইজ, পেজ সেটআপ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সেটিংস ঠিক করে প্রিন্ট দেওয়া যায়।
৩. লেখা সম্পাদনা ও ফরম্যাটিং
লেখা ফরম্যাটিং:
- Font Style: ফন্টের আকার, ধরন (Times New Roman, Arial ইত্যাদি), এবং রঙ পরিবর্তন করা যায়।
- Font Size: লেখার আকার বৃদ্ধি বা হ্রাস করা যায়।
- Bold, Italic, Underline: লেখাকে গাঢ়, বাঁকা বা আন্ডারলাইন করা যায়।
- Text Alignment: লেখাকে বাঁ দিকে, ডান দিকে, মাঝখানে বা সমানভাবে সাজানো যায়।
- Bullets এবং Numbering: তালিকা বা সিরিয়াল নাম্বার যুক্ত করা যায়।
প্যারা ফরম্যাটিং:
- Line Spacing: প্যারা বা লাইনের মাঝে ফাঁকা স্থান ঠিক করা যায়।
- Indentation: প্যারা-র সূচনায় বা ডানে জায়গা বাড়ানো বা কমানো যায়।
৪. অন্য উপাদান যোগ করা
- ছবি ও শেপ: ডকুমেন্টে ছবি, শেপ, স্মার্ট আর্ট, চার্ট ইত্যাদি যোগ করা যায়।
- Header এবং Footer: পৃষ্ঠার উপরে ও নিচে লেখা বা পেজ নম্বর যোগ করা যায়।
- টেবিল তৈরি: ডকুমেন্টে টেবিল তৈরি করে ডেটা সাজানো যায়।
- Hyperlink: ইন্টারনেট লিংক বা ডকুমেন্টের ভেতরে লিংক তৈরি করা যায়।
৫. রিভিউ ও সংশোধন
- Spell Check এবং Grammar Check: অটোমেটিক বানান ও ব্যাকরণ ভুল ঠিক করা যায়।
- Track Changes: ডকুমেন্টে পরিবর্তনগুলো ট্র্যাক করা হয়, যা রিভিউ এবং সংশোধনের জন্য কার্যকর।
- Comments: নির্দিষ্ট শব্দ বা বাক্যে মন্তব্য যোগ করা যায়।
৬. উন্নত বৈশিষ্ট্যসমূহ
- Mail Merge: অনেকগুলো চিঠি বা ইমেইল স্বয়ংক্রিয়ভাবে তৈরি করা যায়। এটি বিশেষ করে অফিস বা অফিসিয়াল যোগাযোগের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ।
- Macros: বিভিন্ন কাজ স্বয়ংক্রিয়ভাবে করার জন্য Macro তৈরি করা যায়।
- Protect Document: ডকুমেন্টে পাসওয়ার্ড দিয়ে সুরক্ষা দেওয়া যায়।
এভাবে এম এস ওয়ার্ড-এর সবগুলো ফিচার ব্যবহার করে আপনি একটি সুন্দর ও পেশাদার ডকুমেন্ট তৈরি করতে পারবেন। যদি আপনি নির্দিষ্ট কোনো ফিচার নিয়ে শিখতে চান বা টিউটোরিয়াল চান, আমি আপনাকে সাহায্য করতে পারব।
0 মন্তব্যসমূহ